ছোট পর্দার জনপ্রিয় অভিনেতা জিয়াউল ফারুক অপূর্ব। প্রথমবারের মতো কাজ করছেন কলকাতার সিনেমায়। নাম ‘চালচ্চিত্র’। প্রতিম ডি গুপ্তের পরিচালনায় ইতিমধ্যেই শুরু হয়েছে এর শুটিং। আর সেখানে অংশও নিয়েছেন বাংলাদেশের এই অভিনেতা। ওপর বাংলায় শুটিং করতে গিয়ে বাংলাদেশের এই অভিনেতা মুখোমুখি হয়েছেন ভারতীয় সংবাদমাধ্যম আনন্দবাজারের। কথা বলেছেন কাজ ও ব্যক্তিজীবন নিয়ে।

শুনেছি, আপনার কপালে বদনাম জুটেছে আপনি নাকি বদমেজাজি? এমন প্রশ্নের জবাবে অপূর্ব বলেন, ‘হুম… (খানিক হেসে)। আসলে যাদের সঙ্গে রাগ করার প্রয়োজন পড়েছে, তাদের উপর রাগ করেছি। আমি তো “সাইকোপ্যাথ” নই। খামোখা রাগ করব কেন? আমি খুব সাধারণ একটা ছেলে। হাসিখুশি থাকতে ভালোবাসি। কেউ আমার সামনে আনন্দ করলে সেটা দেখতে ভাল লাগে। জীবনটা তো খুব ছোট। চেষ্টা করি, সবার সঙ্গে ভাল ব্যবহার করার। রাগ হওয়ার মতো কারণ থাকলে তখন তো রাগ দেখাতেই পারি।’

অনেকে বলেন, আপনার নাকি আচরণগত সমস্যা রয়েছে? উত্তরে এই অভিনেতা বলেন, ‘আসলে এক এক জন মানুষ এক এক রকম ভাবে ভাবেন। আমাকে কে কীভাবে দেখছেন, সেটা তাদের সমস্যা। আমি কেমন, সেটা আমি জানি ও উপরওয়ালা জানে।’

টলিউডের প্রথম সিনেমাতে রোমান্টিক নায়ক থেকে একেবারে খলচরিত্রে। কী প্রস্তুতি নিয়েছেন? বাংলাদেশের এই অভিনেতার কথা, ‘(একটু ভেবে…) আগেভাগে কিছুই বলতে চাই না। তবে গল্পের অনেকগুলি সাব প্লট আছে। আমি আসলে সোজাসাপটা কথা বলতে পছন্দ করি। কিন্তু কি বলতে কি বলব, তাই চুপ করে আছি।’

কিছুদিন আগে নিশো এসেছিলেন কলকাতায়। আপনার ও নিশোর মধ্যে চেহারাগত সাদৃশ্যের কারণে কাকে বেশি বিড়ম্বনায় পড়তে হয়েছে? উত্তরে রোমান্টিক এই নায়ক বলেন, ‘বিড়ম্বনায় নিশোকে পড়তে হয়েছে। প্রচুর মানুষ ওকে অপূর্ব বলে ডাকত। ওকে বেশ ভুগতে হয়েছে তার জন্য। থ্যাঙ্ক গড যে ও নিশো হয়ে উঠতে পেরেছে। আসলে নিশোকে নিয়ে এসেছিলাম আমি। অভিনেতা হওয়ার আগে থেকে আমরা বন্ধু। আমি যখন নাটক শুরু করি, তখনই রাকাত ভাইকে বলি ওকে নাটকে নেওয়ার কথা। তারপর মাঝে অন্য কাজে ব্যস্ত ছিল। এখন আবার কাজ শুরু করেছে।’

আপনি নাটকে এত খ্যাতি পেয়েছেন। ঢালিউডের সিনেমায় আপনাকে সেভাবে দেখা যায়নি কেন? উত্তরে অপূর্ব বলেন, ‘আমি “গ্যাংস্টার রিটার্নস” বলে একটা সিনেমা করেছিলাম। কিন্তু আচমকা সিনেমাটা নির্ধারিত সময়ের এক সপ্তাহ আগে মুক্তি পেয়ে যায়। তখন কিছু একটা হয়েছিল। আমি তো সিনেমার লোক না, বুঝতাম না। ওটা একটা তিক্ত অভিজ্ঞতা জীবনের। আমি অপূর্ব হয়েছি নাটকের জন্য। সিনেমার ক্ষেত্রে ব্যাটে-বলে মেলেনি। আসলে কখনও আমার গল্প পছন্দ হয়নি, কখনও পারিশ্রমিক পছন্দ হয়নি। সব কিছু মিললে তবেই তো ভাল কাজ হয়।’

এমন এক রোম্যান্টিক হিরোকে বড় পর্দায় সুযোগই দেওয়া হল না। আক্ষেপ হয়? উত্তরে তিনি বলেন, ‘এই বিষয়টা প্রযোজকরা উত্তর দিতে পারবে না। একজন অভিনেতার দরকার দর্শকের ভালোবাসা। সেই বিষয়ে আমি খুব সৌভাগ্যবান। বহু দর্শকের ভালোবাসা পেয়েছি ও পেয়ে যাচ্ছি। আমার কাছে কোনো পর্দার গুরুত্ব কম অথবা বেশি নয়। সব কাজেই সেরাটা দেওয়ার চেষ্টা করি।’

বাংলাদেশে বড় পর্দার হিরো বলতে কি শুধুই শাকিব খান? এমন প্রশ্নের উত্তরে অপূর্ব বলেন, ‘এগুলো নিয়ে কথা বলতে চাই না। পরবর্তী প্রশ্নতে চলে যাওয়াই সমীচীন। (একটু থমকে…) আমি শুধু বলতে পারি তিনি “সুপারস্টার”। এত বছর ধরে একটা ইন্ডাস্ট্রিকে ধরে রাখতে দম লাগে। সেই সম্মান তার প্রাপ্য। কেউ কারও থেকে কম বা বেশি নয়। সবার জীবনে উত্থান-পতন থাকে। আজ যে “সুপারস্টার”, ভবিষ্যতে অন্য কেউ সেই জায়গা নেবে।’